পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত দিন থাকতে রিনিউ করা করবেন জানেন না? প্রয়োজনের সময় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে দেখলে তখন বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হবে। তাই, পাসপোর্ট রিনিউ করার সঠিক সময় জানা আবশ্যক।

বিদেশ যাত্রা বা অন্য কাজের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। পাসপোর্ট ৫ বছর মেয়াদ এবং ১০ বছর মেয়াদের জন্য রিনিউ করা যায়। আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন অবশিষ্ট আছে এটি যাচাই করে যদি দেখেন পাসপোর্টের মেয়াদ দ্রুতই শেষ হতে চলেছে, তাহলে পাসপোর্ট রিনিউ করতে হবে।

পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করা উচিত এই বিষয়টি নিয়েই আজ বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করবো। চলুন, জেনে নেয়া যাক।

পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত দিন থাকতে রিনিউ করবেন

পাসপোর্ট এর মেয়াদ উত্তীর্ণের ৬ মাস পূর্বেই রিনিউ করা উচিত বলে অনেকেই মনে করেন। পাসপোর্ট একটি জরুরি ডকুমেন্ট হওয়ার কারণে জরুরি ভিত্তিতে দেশের বাইরে যেতে এটি প্রয়োজন হয়। তাই, পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকা অবস্থায় এটি রিনিউ করা হলে পরবর্তীতে রিনিউ করার মতো ঝামেলা থেকে বিরত থাকা সম্ভব।

তবে, আপনি চাইলে পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন পূর্বে বা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও রিনিউ করতে পারবেন। পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে কোনো ধরণের ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তাই, আপনার ইচ্ছেমতো সময়ে পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে পারবেন।

পাসপোর্ট এর মেয়াদ যতদিন থাকুক বা পাসপোর্ট এর মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও আপনি চাইলে পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করার মাধ্যমে পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন। তবে, যেহেতু এটি একটি জরুরি ডকুমেন্ট, তাই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ৬ মাস পূর্বেই রিনিউ করে রাখা উত্তম কাজ।

কিভাবে পাসপোর্ট রিনিউ করবেন

পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য E-Passport Online Registration Portal ভিজিট করতে হবে। এরপর, পূর্বের একাউন্টে লগইন করতে হবে বা নতুন একাউন্ট তৈরি করতে হবে। অতঃপর, পাসপোর্ট আবেদন অপশন থেকে নতুন পাসপোর্ট আবেদনের মতো করেই একটি পাসপোর্ট আবেদন করতে হবে।

তবে, আবেদন করার সময় আপনার পূর্বের একটি পাসপোর্ট রয়েছে সেটি সিলেক্ট করতে হবে। অতঃপর, আপনার পূর্বের পাসপোর্টটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এজন্য Expired অপশন সিলেক্ট করতে হবে। এরপর, কত বছর এবং কত পৃষ্ঠার পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে।

তাহলে, ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে পারবেন অনেক সহজেই। ই পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করে পাসপোর্ট রিনিউ ফি ব্যাংকে জমা দেয়ার পর কাগজপত্র পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। তাহলে, সহজেই পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ কখন করতে হয়?

পাসপোর্ট এর মেয়াদ ৬ মাস থাকতেই পাসপোর্ট রিনিউ করতে হয়। তবে, আপনি চাইলে পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের দিন বা পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে পারবেন। পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে সময়ের কোনো বাধাবাধ্যকতা নেই।

পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হওয়ার কারণে অনেকেই মনে করেন ৬ মাস মেয়াদ থাকা অবস্থায় এটি রিনিউ করা উচিত। এতে করে, পাসপোর্ট রিনিউ করার কথা ভুলে গেলেও জরুরি প্রয়োজনে রিনিউ করার মতো ঝামেলায় পড়তে হবেনা। তাই, আপনি চাইলে ৬ মাস মেয়াদ থাকতেই পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারেন।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কি রিনিউ করা যায়?

হ্যাঁ, পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পাসপোর্ট রিনিউ করা যায়। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও আপনি পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করতে পারবেন। রিনিউ আবেদন করার জন্য E-Passport Online Registration Portal ভিজিট করুন এবং পাসপোর্ট রিনিউ আবেদন করুন।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে?

পাসপোর্ট রিনিউ করার সময় নতুন পাসপোর্ট আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র লাগে, ঠিক তেমনি সকল কাগজপত্র লাগে এবং পূর্বের পাসপোর্টটি প্রয়োজন হয়। পাসপোর্ট রিনিউ করতে কি কি লাগে তার একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে —

পাসপোর্টের মেয়াদ কত বছর?

পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছর এবং ১০ বছর হয়ে থাকে। ৫ বছর মেয়াদের ৪৮ পাতা এবং ৬৪ পাতার পাসপোর্ট হয়ে থাকে। আবার, ১০ বছর মেয়াদের ৪৮ পাতা এবং ৬৪ পাতা পাসপোর্ট হয়ে থাকে। তাই, আপনি চাইলে ৫ বছর বা ১০ বছর মেয়াদের যেকোনো একটি পাসপোর্টের জন্য আবেদন বা পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।

পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে জরিমানা কত?

পূর্বে পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হলে তা নবায়নের সময় নির্ধারিত ফি ছাড়াও প্রতি বছরের জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ৩৪৫ টাকা জরিমানা দিতে হতো। যেমন, ২০১৮ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া পাসপোর্ট ২০২০ সালে নবায়নের ক্ষেত্রে ৬৯০ টাকা জরিমানা গুনতে হতো। তবে বর্তমানে এই জরিমানার বিধান আর নেই। অর্থাৎ পাসপোর্ট মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও এখন আর অতিরিক্ত কোনো জরিমানা পরিশোধ করতে হবে না।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কত টাকা লাগে?

৫ বছর মেয়াদের ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট নবায়ন ফি ৪,০২৫ টাকা, ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট নবায়ন ফি ৬,৩২৫ টাকা। এছাড়াও, ১০ বছর মেয়াদি ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট রিনিউ ফি ৫,৭৫০ টাকা এবং ৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট রিনিউ ফি ৮,০৫০ টাকা। তবে, পাসপোর্ট ডেলিভারির ধরনের উপর ভিত্তি করে এই পাসপোর্ট রিনিউ ফি এর পরিমাণ কমবেশি হবে।

সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্টের মেয়াদ কত বছর?

সরকারি চাকরিজীবীদের পাসপোর্টের মেয়াদ ৫ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। আপনি কত বছর মেয়াদের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন তার উপর ভিত্তি করে উক্ত পাসপোর্টের মেয়াদ নির্ধারণ হবে।

পাসপোর্টে ৬ মাসের কম সময় থাকলে কি ভ্রমণ করা যাবে?

প্রায় প্রতিটি দেশের ভিসা আবেদন করার সময় তাদের ভিসা আবেদনের নিয়মের মাঝে একটি কথা উল্লেখ থাকে যে, ভিসা আবেদন করার জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যুনতম ৬ মাস হতে হবে। তাই, আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম হলে বাইরের দেশে ভ্রমণ না করে পাসপোর্ট রিনিউ করে মেয়াদ বৃদ্ধি করে এরপর ভ্রমণ করুন।

আমার পাসপোর্টের মেয়াদ 3 মাসের মধ্যে শেষ হলে আমি কি ফিলিপাইন ফিরে যেতে পারি?

আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের কম হলে আপনি ফিলিপাইন যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করতে পারবেন না। ফিলিপাইন যেতে চাইলে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে। ৬ মাসের কম মেয়াদসম্পন্ন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ভিসা আবেদনে অনুমোদন দেয়া হয়না।

পাসপোর্টের সর্বনিম্ন বয়স কত?

১৮ বছর বয়স হলে এনআইডি কার্ড দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি চাইলে ১৮ বছরের কম বয়সের ক্ষেত্রেও পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে, আপনার অনলাইন জন্ম সনদটি ব্যবহার করতে হবে। তাই, পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য বয়সের কোনো লিমিট নেই বলা চলে।

বয়স কম হলে শিশু হিসেবে পাসপোর্ট আবেদন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে, জন্ম সনদের অনলাইন কপি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া, পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ব্যবহার করতে হবে পাসপোর্ট আবেদন করার সময়।

সারকথা

পাসপোর্ট এর মেয়াদ কত দিন থাকতে রিনিউ করবেন এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর এই পোস্টে উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। যারা পাসপোর্ট আবেদন এবং পাসপোর্ট রিনিউ সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগতেছেন, তাদের জন্য পোস্টে উল্লিখিত তথ্যগুলো উপকারী হবে বলে আশা করছি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *